
আমি দারুণ বিচলিত!
ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত
পথহারা ক্লান্ত পথিকের মত
এক বিভৎস রকম বিচলিত!
অন্ধ হে বিশ্ববাসী! জানি
সদুত্তর দেয়ার ক্ষমতা তোদের নাহি।
তবু স্বপ্নবাজ এই আমি
প্রশ্ন রাখি,বলতো?
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ধূসরতায়
নিক্ষিপ্ত পৃথিবীর বিভৎসতায়,
কারা উজ্জীবিত?
কারা লালন করে এই ধ্বংসযজ্ঞ?
নিরবে চেয়ে চেয়ে দেখিছে বিশ্ব।
ধ্বংসস্তুপের নিচে পতিত ক্ষত বিক্ষত
সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতকের নির্লিপ্ত
চোখে রেখে যাওয়া হাজারো প্রশ্ন?
ওহে চির বধির!অন্ধ নির্বোধ বিশ্ব,
বলতে পারিস যদি তবে
বল,গগন বিদীর্ণ চিৎকারে
মানবতা আজ কার ক্ষমতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ?
গাজাবাসি! হায় গাজাবাসি!
যারা কী-না আজ নিজভূমেই পরবাসী।
দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে
ভূমি দস্যুরা আজ ভূমির লোভে,
চালাচ্ছে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ।
নারী,শিশু, বৃদ্ধ বণিতার আশ্রয়
প্রার্থনারত যত উপাসনালয়,
কিংবা চিকিৎসারত হাসপাতালো
নিমিষেই যেন এক ধ্বংসস্তুপ!
যেথায় চাপা পরে লাশ সারি সারি,
নামধারী মানবতার যত কান্ডারী
সবকিছু দেখেও কেন নির্লজ্জ নিশ্চুপ?
বিশ্ব মোড়লদের এ কেমন উন্মাদনা?
এ কেমন উচ্চবিলাসী স্বপ্ন?
যার প্রতিটি স্তরে রক্ত আর লাশ।
যে স্বপ্ন মানবতাকে বিপন্ন করে!
যে স্বপ্ন মানব জাতিকে বিধ্বংস করে!
ভূলুণ্ঠিত করে সৃষ্টির সেরা জীবের তকমা।
লাশের সারি আর তাজা রক্তের ঘ্রাণে,
যারা নিজেকে অসীম ক্ষমতাধর ভাবে,
তারা কি ভাবে না?
প্রতিনিয়ত হিংস্র থাবার করাল গ্রাসে
মানবতা আজ কিভাবে বিপন্ন হচ্ছে?
সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক, যে কি-না
যুদ্ধ বোঝেনা! শত্রুতা বোঝে না!
বোঝে না ধর্ম কিংবা নিজ দেশ,
সে শিশুটিও তোদের বলিতে হচ্ছে নি:শেষ।
সৃষ্টির সেরা প্রতিটি মানুষই অনন্য,
হয়েছে অসীম সম্ভাবনা।
সেই মানবতার সম্ভাবনা ভুলে
প্রতিহিংসার তরে
কিংবা আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য,
শুকুনেরা আজ করিতেছে মানবতা বিপন্ন।
শত ধিক জানাই তোদের!
যারা বানিয়েছিস বিশ্ব মোড়ল,
যারা দিয়েছিস কষায়ের হাতে বিশ্ব নেতৃত্ব।
সম ঘৃণা তোদেরও প্রাপ্য।
নির্যাতিত আছে যত জন
তাদের তরে ছলছল মোর দু নয়ন।
যাদের রক্ত স্রোতে ভেসে
লাশের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে,
নিয়েছিস ছিনিয়ে ওই সিংহাসন।
ওরে রক্ত পিপাসু পিশাচের দল, পৃথিবীতে অপরাজেয় ক্ষমতা
কবে কে পেয়েছে বল?
ঘৃণায় ঘৃণায় প্রত্যাশার ঝুলি
যেদিন পরিপূর্ণ হবি,
সেদিন জনতা ক্ষমতা নেবে কাড়ি।
বোমার আঘাতে বিকলাঙ্গ শিশু
পরম তৃপ্তি নিয়ে নিক্ষেপ করিবে থুতু।
বিকলাঙ্গ শিশুর থুথু,শুধু থুতু নয়,
যেন হিরোশিমায় লিটল বয়।
মানবতা আর স্বাধীনতার গান গেয়ে
অন্তরে যত হিংস্রতা লালন করে,
সেই মানবতাই আজ করেছিস ধ্বংস।
তাদের চোখের জল,আর্তনাদ
শত মায়ের হাহাকার,চিৎকার
তোদের কর্ণপর্দা ফাটিয়ে
দৃষ্টিশক্তি ছিন্ন ভিন্ন করে,
কোন একদিন পদদলিত করবেই
তোদের সকল অহংকার।
নিষ্ঠুর হায়েনার দল,
বেঁচে রবি যতকাল
লাঞ্ছিত হবি ঘৃণাভরে নিজ দেশেরই তরে।
লাঞ্ছিত মৃত্যুতেও পাবি না নিস্তার।
যতদিন রহিবে এই ভূমন্ডল,
ঘৃণা ভরে স্মরিবে বিশ্ববাসী তোদের চিরকাল।
লেখক: মো. তারেক আজিজ,
বিএ অনার্স,এমএ (বাংলা)
সহকারী শিক্ষক, তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়।
সাপাহার, নওগাঁ।