
নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান (চট্টগ্রাম)।।
প্রকৃতি মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর রেনু বিক্রির মধ্যে দিয়ে ডিম সংগ্রহ উৎসব উদযাপন করেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। ৩ জুন মঙ্গলবার রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় আয়োজিত ডিম সংগ্রহ উৎসব উদযাপন করা হয় নদীর হালদা ব্রিজ মায়াবী হালদা রিসোর্টে ।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগ, কুমিল্লা মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক পরি (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বিশ্বজিৎ বৈরাগী।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, হালদা প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রক্তিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও হালদা রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আশেক রসুল রোকন প্রমুখ। এ সময় মৎস্যচাষী মোস্তাক, ডিম সংগ্রহকারী রোসাঙ্গীর আলমসহ হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার হালদা নদীতে মা মাছ সাত গুণ বেশি ডিম ছেড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। ডিম সংগ্রহকারী ও হালদা পাড়ের জেলেরা সঠিক ভূমিকা পালন করলে, আগামীতে আরো বেশি ডিম ছাড়বে মা মাছ।
হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, বিবেকের তাড়নায় দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব নিয়ে হালদার সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সফল হয়েছি সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সকলের সহযোগিতায়। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে হালদায় মা মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে তাঁদের সম্মাননা প্রদান করা হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, ১৪ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করা আমাদের জন্য গৌরবের। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
হালদা প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতি বছর ডিম সংগ্রহ করে দেড় লাখ টাকায় রেনু বিক্রি করে চলে যাবেন এটা হতে পারে না। হালদা নদীর মালিকানা নিতে হবে। হালদা রক্ষা করতে হবে।
সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী বলেন, দীর্ঘ ২৮ ধরে বছর হালদা নিয়ে কাজ করছি। কাজ করতে গিয়ে অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয়েছে। হামলা শিকার হতে হয়ে অনেকজনকে। সকল সংকট কাটিয়ে হালদায় অভয়ারণ্যে সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি গত দুই তিন বছর ধরে। পুনাঙ্গতা পেয়েছি এ বছর আশানুরূপ ডিম সংগ্রহের মাধ্যমে।
এর আগে হালদা পাড়ে কেক কেটে ডিম সংগ্রহ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। মঞ্চে অনুষ্ঠানের শুরুতে সাবেক কমিশনার আশেক রসুল রোকন রচিত হালদা নদী নিয়ে একটি গান ও রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদীর লিখিত পুঁথি গান পরিবেশন করা হয় । পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের স্বনামধন্য শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। এসময় ডিম সংগ্রহ কারীরা গানের সুরে নেচে-গেয়ে উৎসবকে মাতিয়ে তোলেন।