
নুর হোসেন, ফেনী:
শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বাড়িয়ে কর্মচারীদের ভাতা অপরিবর্তিত রাখার প্রতিবাদে ফেনী জেলাজুড়ে তিন শতাধিক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করেছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানান।
জানা যায়, সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি অনুবিভাগ থেকে জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিক্ষকদের বিদ্যমান ২৫% উৎসব ভাতা বাড়িয়ে ৫০% করা হবে। তবে কর্মচারীদের ক্ষেত্রে পূর্বের ন্যায় ৫০% বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে কম বেতনস্কেলে থাকা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
ফেনী জেলা তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন ভুঞা বলেন, “শিক্ষকদের ভাতা বাড়িয়ে কর্মচারীদের ভাতা না বাড়ানো একটি হটকারী সিদ্ধান্ত। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, এই বৈষম্য দূর করে আমাদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।”
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি ও করিম উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আদনান হাবিব বলেন, “আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছি। অথচ আজও আমাদের ন্যায্য মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র।”
তিনি আরও বলেন, “২০০৩ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুকের সভাপতিত্বে সিদ্ধান্ত হয়েছিল শিক্ষকরা বছরে দুইবার মূল বেতনের ৫০% এবং কর্মচারীরা দুইবার ১০০% হারে উৎসব ভাতা পাবেন। সেই অনুযায়ী এতদিন চললেও, বর্তমান সিদ্ধান্তে শিক্ষকরা ৫০% করে দুইটি ভাতা পেলেও কর্মচারীদের ভাতা বাড়ানো হয়নি, যা চরম বৈষম্য।”
ফেনীর রামপুর নাসির মেমোরিয়াল কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নুরুল আলম বলেন, “আমাদের বেতন এমনিতেই কম, তার ওপর উৎসব ভাতায় এমন বৈষম্য থাকলে জীবন চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, পুরনো প্রজ্ঞাপন বাতিল করে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা দ্রুত বাড়ানো হোক।”